সঙ্কটে দ্বৈত সংক্রমণ,
করোনা ও ডেঙ্গু একসঙ্গে হলে করণীয়।

করোনাভাইরাসের অতিমারি বিশ্বজুড়ে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এলেও ভাইরাসটির নতুন উপধরণ নিয়ে উদ্বেগ এখনো রয়ে গেছে। পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু জ্বরও জনস্বাস্থ্যের বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একই সঙ্গে করোনা ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে শরীরে জটিলতা অনেক গুণ বেড়ে যায়। এ অবস্থায় রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ঢাকার ধানমন্ডিস্থ পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান বলেন, “দ্বৈত সংক্রমণের ক্ষেত্রে রোগীর দেহে প্রতিরোধব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ পড়ে। এ সময় রক্তচাপ কমে যাওয়া, কিডনি ও লিভারের ক্ষতি, এমনকি শকে চলে যাওয়ার ঝুঁকিও তৈরি হয়।”
উপসর্গ কীভাবে বুঝবেন?
করোনা ও ডেঙ্গুতে একযোগে আক্রান্ত হলে দেখা দেয় তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা, গলাব্যথা, বমি, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্টসহ একাধিক উপসর্গ। বিশেষ করে জ্বর দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং স্বাভাবিকের চেয়ে শ্বাসের গতি বেড়ে যেতে পারে।
কাদের বেশি ঝুঁকি?
বিশেষজ্ঞরা জানান, শিশু, গর্ভবতী নারী, প্রবীণ ও ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা স্থূলতার মতো দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই সংক্রমণ মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
করণীয় কী?
-
জ্বরের উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
-
পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে এটি করোনা, ডেঙ্গু, নাকি উভয় সংক্রমণ।
-
রোগীকে প্রচুর পানি ও তরল খাবার খাওয়াতে হবে।
-
মাথা ও শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছিয়ে দেওয়া, প্রয়োজনে হালকা গরম পানিতে গোসল করানো যেতে পারে।
-
প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ব্যথার ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
-
করোনা শনাক্ত হলে রোগীকে আলাদা ঘরে রাখতে হবে এবং অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।
সচেতনতা ছাড়া বিকল্প নেই
করোনাভাইরাস ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা যেমন জরুরি, তেমনি সামাজিকভাবে সচেতনতা গড়ে তোলাও অপরিহার্য। যেখানে–সেখানে কফ–থুতু না ফেলা, নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার, এবং এলাকাভিত্তিক জলাবদ্ধতা ও মশার বিস্তার রোধে সক্রিয় অংশগ্রহণই পারে এই মহাবিপদ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ—সবার সম্মিলিত সচেতনতাই একমাত্র পথ।