রাশিয়াকে শান্তি আলোচনায় বসার প্রস্তাব ইউক্রেনের

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তার দেশ রাশিয়ার সঙ্গে ফের শান্তি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে। গত মাস থেকে থমকে থাকা আলোচনা পুনরায় শুরুর লক্ষ্যে এ নতুন দফা বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

গত শনিবার সন্ধ্যায় দেওয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, তার ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা রুস্তম উমেরভ রুশদেরকে আগামী সপ্তাহে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, যুদ্ধবিরতি অর্জনে প্রয়োজনীয় সব কিছুই করতে হবে। তিনি এদিনও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসার আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, “টেকসই শান্তি নিশ্চিতে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক জরুরি।”

আকাশপথে ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার আরেক দফা ব্যাপক হামলার কয়েক ঘণ্টা পরই কিয়েভের এ প্রস্তাব এলো। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, শুক্রবার ও শনিবার রাতের মধ্যে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহরসহ ১০টি অঞ্চল এই হামলার শিকার হয়েছে। এ হামলায় অন্তত তিনজনের নিহত হওয়ারও খবর মিলেছে। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হামলায় রাশিয়া যে ৩৪০টির বেশি বিস্ফোরক ও ডামি ড্রোন এবং ৩৫টি ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, তার অনেকগুলোই তারা ভূপাতিত করেছে।

গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি নেটো দেশগুলোর মাধ্যমে ইউক্রেনে সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র পাঠাবেন। একইসঙ্গে তিনি রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে তাদেরকে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে ৫০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। এই সময়সীমার মধ্যে রাশিয়া কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারলে মস্কোর বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প।

চলতি বছর রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ইস্তাম্বুলে দুই দফা শান্তি আলোচনা হলেও তাতে দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি। তবে এই বৈঠকগুলোর কল্যাণেই বিপুল সংখ্যক যুদ্ধবন্দি ও মৃত সেনা বিনিময় সম্ভব হয়েছে। সর্বশেষ জুনের বৈঠকের পর ইউক্রেনের আলোচকরা বলেছিলেন, রাশিয়া ‘নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। কিইভ ও তার পশ্চিমা মিত্ররা দীর্ঘদিন ধরেই মস্কোকে এ প্রস্তাবে রাজি হতে চাপ দিয়ে আসছিল। রাশিয়াও ইউক্রেনকে বেশ কিছু দাবি দিয়েছে, এর মধ্যে আছে যেসব ভূখণ্ড এর মধ্যে মস্কোর হাতে গেছে, কিয়েভকে সেগুলোর দাবি ছেড়ে দিতে হবে এবং তারা কোনো ধরনের পশ্চিমা সামরিক সমর্থন নিতে পারবে না।

সেসময় জেলেনস্কি অভিযোগ তুলেছিলেন যে, ‘সম্ভাব্য পরবর্তী বৈঠক’ যেন ব্যর্থ হয় তা নিশ্চিত করতে মস্কো সবই করছে। ইউক্রেনে ‘নাৎসিবাদকে কবর দিতে’ ও রুশ ভাষাভাষীদের রক্ষায় ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী দেশটিতে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বর্তমানে মস্কোর দখলে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড; এর মধ্যে আছে ২০১৪ সালে কব্জায় নেওয়া ক্রাইমিয়াও।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker