আলোচনার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানোর সম্ভাবনা আছে: অর্থ উপদেষ্টা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউএসটিআর-এর সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান আলোচনার সময় আরও ভালো ফলাফল পাওয়ার ব্যাপারে উচ্চ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘আজ (৮ জুলাই) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (বাংলাদেশ সময় ৯ জুলাই ভোরে) নির্ধারিত বৈঠকের পর আমরা শুল্ক ইস্যুতে আরও অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে পারব।’

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির দুটি পৃথক বৈঠকের সভাপতিত্ব করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প শুল্ক ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) সাথে বৈঠক করবে। ‘সেই বৈঠকের পরেই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানা যাবে।’

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এমন চিঠি প্রায় ১৪টি দেশের কাছে পাঠিয়েছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।

বাংলাদেশি পণ্যের উপর ট্রাম্পের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে এবং বাণিজ্য সচিবও আজ যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই বৈঠকে আরও ভালো ফলাফলের প্রত্যাশা করছি। ‘যাই হোক না কেন, আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করব।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ বৈঠক ইতিবাচক ছিল।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন, তবে বিষয়টি একান্ত আলোচনার মাধ্যমেই চূড়ান্ত হবে।

ভিয়েতনামের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২৬ শতাংশ শুল্ক কমানোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি মাত্র ৫ বিলিয়ন ডলার, অথচ ভিয়েতনামের ঘাটতি ১২৫ বিলিয়ন ডলার।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামকে ছাড় দিতে রাজি হয়েছে, কিন্তু আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি খুবই ছোট।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এমন চিঠি এ পর্যন্ত ১৪টি দেশে পাঠানো হয়েছে। তবে, আমরা আরও আলোচনা করব।’

এনবিআরের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছর (২০২৪-২৫ অর্থবছর) রাজস্ব আদায় ছিল মধ্যম মানের এবং তেমন কোনো ঘাটতি ছিল না।

চলতি অর্থবছর নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা পরিবর্তনে মনোযোগ দিচ্ছে, যাতে রাজস্ব সংগ্রহে অপচয় বা ঘাটতি রোধ করা যায়।

তিনি বলেন, ‘রাজস্ব আদায়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি, কিন্তু আমরা প্রায়ই সেগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারি না।’

মুল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ভালো খবর হলো, গত মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যদিও মুল্যস্ফীতি দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আমাদের প্রচেষ্টার জন্য খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি কমেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি সামনের মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি নিম্নমুখী ধারায় থাকবে। খাদ্য বহির্ভূত মুল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমছে।

উপদেষ্টা বলেন, আজকের বৈঠকে এলএনজি আমদানি, গাইবান্ধায় স্কুল আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ এবং সার আমদানি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সূত্র: বাসস

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker