গাজীপুরে ১০ দফা দাবিতে শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় বকেয়া বেতন পরিশোধ ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের অপসারণসহ ১০ দফা দাবিতে আরএকে সিরামিক কারখানার শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।

রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধের ফলে উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও যানবাহন চালকরা।

স্থানীয়রা জানান, শ্রমিকদের মহাসড়কে অবস্থানের খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সরিয়ে দিতে চেষ্টা করলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে সকাল ১০টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সরকার ঘোষিত নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন না করায় দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ বিরাজ করছিল শ্রমিকদের মধ্যে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা ১০ দফা দাবি তুলে ধরে আন্দোলনে নামেন।

শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে— চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ইনক্রিমেন্টসহ বকেয়া সাত মাসের এরিয়ার বিল ১ আগস্টের মধ্যে প্রদান, শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী উপযুক্ত পদে নিয়োগ ও অযোগ্য ব্যক্তিদের অপসারণ, প্রতি বছর মানসম্পন্ন বেতন বৃদ্ধির নিশ্চয়তা, আন্দোলনের সময় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও হাজিরা গণনা, নতুন ও পুরাতন শ্রমিকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো, সিভিল কর্মীদের ন্যূনতম ৫০০ টাকা হাজিরা ও ১৫০০ টাকা হাজিরা বোনাস, আন্দোলনের পর ছাঁটাই হলে পুনরায় আন্দোলনের ঘোষণা, বয়স্কভাতা ও পুরাতন সুযোগ-সুবিধা চালু এবং ভারতীয় কর্মকর্তাদের অপসারণ।

কারখানার শ্রমিক হানিফ মিয়া বলেন, আমাদের ন্যায্য দাবিগুলো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি, কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা রাস্তায় নেমেছি।

আরেক শ্রমিক মানিক বলেন, চুক্তি অনুযায়ী সাত মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত আজ-কাল করে আমাদের হয়রানি করছে। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই দাবির ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় আমরা আন্দোলনে নেমেছি।

এ বিষয়ে কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের (এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন) কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শ্রমিকদের দাবি নিয়ে কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। কিন্তু কিছু উশৃঙ্খল শ্রমিক উস্কানিতে সড়ক অবরোধ করেছে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারিক বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় শ্রমিকরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করা হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker