ফরিদপুরে হাইওয়ে থানার সামনে দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ে গেল জব্দকৃত বাস।

ফরিদপুর সদর উপজেলার করিমপুরে হাইওয়ে থানার সামনে রাখা একটি জব্দ করা বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। বাসটি একটি সড়ক দুর্ঘটনার মামলার আলামত হিসেবে থানার নিকটস্থ সড়কের পাশে রাখা ছিল।
ফায়ার সার্ভিসের দ্বিগুণ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে
ঘটনার পরপরই ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় ৪০ মিনিট চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর রাত দুইটার দিকে বাস থেকে আবারও ধোঁয়া উঠতে দেখা গেলে ফায়ার সার্ভিসকে পুনরায় ডাকা হয়। তবে দ্বিতীয়বার ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুনের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের দলনেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, “বাসটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। স্বাভাবিকভাবে আগুন লাগার সুযোগ নেই। এটি নিঃসন্দেহে সন্দেহজনক, তদন্ত ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না।”
দুর্বৃত্তের সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত পুলিশের
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কোনো দুর্বৃত্ত বাসের ভেতরে ঢুকে আগুন লাগিয়েছে। বাসটি একটি মামলার আলামত ছিল, ফলে এটি পুড়ে যাওয়াটা গুরুতর বিষয়।”
তিনি জানান, এ ঘটনায় হাইওয়ে থানাকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করতে বলা হয়েছে।
পাহারাহীন অবস্থায় আগুন, সিসিটিভিও অকার্যকর
করিমপুর হাইওয়ে থানার ওসি সালাউদ্দিন চৌধুরী জানান, “বাসটি থানার প্রায় ১৫০ গজ দূরে সড়কের পাশে রাখা ছিল। এটি পাহারা দেওয়ার দায়িত্বে ছিল মালিকপক্ষ, কিন্তু শনিবার দুপুরের পর থেকে কেউ দায়িত্বে ছিলেন না। রাত ১২টার দিকে আমরা আগুনের খবর পাই। আমাদের ফাঁড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা রাতে পরিষ্কার ফুটেজ দেয় না, তাই প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের সাহায্যে ফুটেজ বিশ্লেষণ চলছে।”
বাসটি ছিল একটি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুর্ঘটনার আলামত
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সূত্র অনুযায়ী, পুড়ে যাওয়া বাসটি গত ৬ জুন মধুখালী উপজেলায় পথচারী চাপা দিয়ে হত্যা মামলার আলামত হিসেবে হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। ঈদুল আজহার আগের দিন ঢাকা থেকে যশোরগামী বাসটি দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত করলে, করিমপুর হাইওয়ে থানায় মামলা হয় এবং বাসটি সড়কের পাশে রাখা হয়।
ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত পুড়ে যাওয়ায় তদন্তেও প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ ও দোষীদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়।