শিশুরা যেভাবে দ্বিন পালনে আগ্রহী হয়

বেশির ভাগ সন্তানের জীবন নষ্ট হওয়ার পেছনে দায়ী মা-বাবার উদাসীনতা, ভুল সিদ্ধান্ত, দ্বিনি শিক্ষা ও ধর্মীয় জীবন গঠনের ক্ষেত্রে উদাসিনতা। তারা শৈশবে তাদের নষ্ট করে, ফলে সন্তান উত্তম জীবন থেকে বঞ্চিত হয় এবং বার্ধক্যে এসে মা-বাবা বঞ্চিত হয়।’ (তুহফাতুল মাউদুদ, পৃষ্ঠা ২২৯)
যেসব কাজে সন্তান দ্বিনদার হয়
সন্তানকে দ্বিনদার হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক কয়েকটি কাজ হলো—
২. মসজিদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি: সন্তানকে মসজিদে নিয়ে যান এবং মসজিদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক জুড়ে দিন। এতে সে এমন একদল মানুষকে কাছে পাবে যারা দ্বিনপালনে আগ্রহী। মসজিদের শিক্ষামূলক আয়োজনগুলোতেও তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন। নিয়মিত মসজিদে গেলে শিশুর মনে যেমন নামাজের গুরুত্ব তৈরি হবে, তেমন তার ভেতর নিয়মানুবর্তিতাও তৈরি হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন সেসব মানুষ আল্লাহর আরশের নিচে ছায়া পাবে যাদের অন্তর মসজিদের সঙ্গে ঝুলে থাকে।
৩. কোরআন তিলাওয়াত শোনানো: সুন্দর ও সমধুর কণ্ঠের তিলাওয়াত শিশুকে কোরআন পড়তে ও জানতে আগ্রহী করে তুলতে পারে। আর কোরআনকে আল্লাহ মানবজাতির জন্য হেদায়েতের উত্স বানিয়েছেন। তাই কোরআনের ভালোবাসা সন্তানকে দ্বিনপ্রিয় করতে পারে।
৪. ক্রীড়া উপাদানে ইসলামী ভাবধারা: শিশুর খেলাধুলার উপকরণ শিশুর মন-মানসিকতার ওপর প্রচণ্ড রকম প্রভাব ফেলে। তাই শিশুর খেলনা ও খেলার উপকরণ কেনার সময় ইসলামী মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। যেমন শিশুকে যদি কার্টুন থেকে বিরত রাখা না যায়, অন্তত ইসলামী কার্টুন যেন দেখে সেটা লক্ষ্য রাখুন।
৬. ইসলামের মৌলিক শিক্ষা প্রদান: বয়স অনুযায়ী ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো শিশুকে শিক্ষা দিন। যেন সে দ্বিনের বিধানগুলো জানতে ও মানতে পারে।
৭. দ্বিনি শিক্ষাকে প্রাধান্য দিন: সন্তানকে দ্বিনদার বানানোর সবচেয়ে উত্তম মাধ্যম হলো তাঁকে দ্বিনি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা। তার জীবন গঠনে জাগতিক শিক্ষার ওপর দ্বিনি শিক্ষাকে প্রাধান্য দিন। কেননা শিশুর জীবনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রভাব অনস্বীকার্য।
৮. ওমরাহ করুন: যাদের সামর্থ্য আছে তারা শিশুদের নিয়ে ওমরাহ করতে পারেন। কেননা শিশুর জীবনে ওমরাহ সুপ্রভাব রয়েছে। দেশ-বিদেশের ভ্রমণের ক্ষেত্রে মুসলিম ঐতিহ্যকে প্রাদান্য দিন।
১০. নিজেই আদর্শ হোন: শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। তাই সন্তানকে দ্বিনদার করতে হলে নিজেই দ্বিনদার হন। সন্তানের সামনে মা-বাবার চেয়ে উত্তম কোনো আদর্শ নেই।
আল্লাহ আমাদের সন্তানগুলোকে চোখের শীতিলতা করে দিন। আমিন।