ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা তুঙ্গে।
মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা।

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ফের চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে। উভয় দেশই সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করেছে। সেনা মোতায়েন, ট্যাংক ও যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রাখা, পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা আর হুঁশিয়ারিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার আকাশ।
গতকাল ভারতের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা কড়া সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর, পাকিস্তানও কড়া জবাব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে জানানো হয়, ভারতের সঙ্গে সবধরনের বাণিজ্য স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধ এবং ভারতীয়দের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। শিখ পুণ্যার্থীদের জন্য সাময়িক ছাড় থাকলেও সার্ক ভিসাধারীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তান ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান কর্মকর্তাদের ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে তাদেরও ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান। ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তার সংখ্যা কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনতে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
সীমান্তে চলছে সেনা মোতায়েন, ভারী অস্ত্র সমাবেশ। পাকিস্তান লাহোরঘেঁষা ঘাঁটিতে ড্রোনসহ নজরদারি ইউনিট বসিয়েছে, ভারতও জোরদার করেছে প্রস্তুতি। ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইটের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ-পাকিস্তান থেকে উত্তর সীমান্তে সৈন্য ও সামরিক সরঞ্জাম স্থানান্তর করেছে ইসলামাবাদ।
এই পরিস্থিতির মধ্যে ভারতীয় নৌবাহিনী মিসাইল প্রতিরোধের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। আইএনএস সুরাত থেকে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে এক উচ্চগতির ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় এটি একটি বড় অগ্রগতি বলেই মনে করছে বিশ্লেষকরা।
কাশ্মীরে সন্ত্রাসী দমনে অভিযান চালিয়ে গত দুই দিনে দেড় হাজারের বেশি লোককে আটক করেছে ভারত। একটি অভিযানে নিহত হয়েছেন একজন ভারতীয় সেনা সদস্য।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কঠোর বার্তা দিয়েছেন—সন্ত্রাসে জড়িতরা ছাড় পাবে না। “পৃথিবীর শেষ প্রান্তেও তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে,” বলেন তিনি।
অন্যদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি দ্রুত যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। ইসলামাবাদের নিরাপত্তা বিশ্লেষক সৈয়দ মুহাম্মদ আলী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “ভারত বড় পরিসরের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।” ভারতের কংগ্রেস দলও এই উত্তেজনার পেছনে সরকার ও গোয়েন্দা ব্যর্থতা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছে।